ইট ভাটার ধোয়ায় ফসলের ক্ষতি পূরণের দাবিতে ইএনও অফিসে কৃষকদের অবস্থান
মানিকগঞ্জে ইটভাটার ধোয়ায় নষ্ট হয়ে যাওয়া ফসলের ক্ষতি পূরণের টাকার দাবিতে কৃষকেরা উপজেলা কর্মকর্তা অফিসের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।
মঙ্গলবার (২৭ মে) সাটুরিয়া উপজেলায় সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এই কর্মসূচি পালন করেন কৃষকেরা।
এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাটুরিয়া উপজেলার নির্বাহী অফিসার মো. ইকবাল হোসেন। তিনি বলেন, আমি জরুরি কাজের জন্য মানিকগঞ্জ শহরে আছি। অফিসে এস কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
কৃষককেরা জানান, উপজেলার ফুকুরহাটি ইউনিয়নের কান্দাপাড়া গ্রামের মেসার্স যমুনা বিকস ফিল্ড নামের ইটভাটার দোয়ার কারণে আমাদের জমির ফসলের (ধান) নষ্ট হয়ে যায়। আমরা অভিযোগ করার পরে গত ২০ মে মঙ্গলবার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ইট ভাটার মালিককে ১ লাখ টাকা জরিমানাসহ বন্ধ করে দেন ইটভাটার সকল কার্যক্রম। পরে কৃষকের ক্ষতি পরিমাণের জন্য গঠন করা হয় একটি কমিটি। সেই কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রতি জন কৃষক তার ক্ষতির অর্ধেক টাকা পাবে বলে জানান। সে টাকার মূল্য হয় ৮ লাখ টাকা। যা গত ২১ মে-র মধ্য পরিষদ করতে বলেন ইটভাটার মালিক পক্ষকে।
তারা আরও জানান, ক্ষতি পূরণ দেওয়ার ৭দিন পার হয়ে গেলেও ইট ভাটার মালিক কিছুই বলছেন না। উল্টো হুমকি দিচ্ছে আমাদের। সে কারণেই আজ সকাল থেকে উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এর সমস্যার সমাধানে জন্য কর্মসূচি পালন করেছি।
উল্লেখ্য অবিযুক্ত ওই ইট খোলার নির্ঘাত গরম হাওয়া ও কালো ধোয়ায় ৭৫ জন কৃষকের প্রায় এক শত বিঘা জমির ধান নষ্ট হয়ে গেছে বলে অভিযোগ কৃষকদের।
ভুক্তভোগী কৃষক মো. শামীম বলেন, ক্ষতিপূরণের টাকা না পাওয়া পর্যন্ত আমরা ইউএনও অফিস ত্যাগ করবো না। আমাদের ক্ষতিপূরণের টাকা দিতে তাল বাহানা করা হচ্ছে এমনকি রাতের আঁধারে অনেক কৃষকদের বাড়িতে গিয়ে মালিকপক্ষের লোকজন ভয় ভীতি দেখিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিচ্ছেন।
মেসার্স যমুনা ব্রিকস ফিল্ড ইটভাটার মালিক প্রতিনিধি আবুল কালাম বলেন, কৃষি অফিসের তত্ত্বাবধানে যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল। তারা সাড়ে ৮ লাখ টাকার ক্ষতি পূরণ দিতে বলছিল। তদন্তের সময় তারা শুধু কৃষকের সাথে কথা বলেছে। আমাদের সঙ্গে কথা বলে নি। মূলত ভাটার ধোয়ায় কৃষকের ক্ষতি হয়নি বলেও সে দাবি করেন।
এ ব্যাপারে সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন বলেন, ভুক্তভোগী কৃষকদের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে একটি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে মেসার্স যমুনা ব্রিকস ফিল্ড কে এক লক্ষ টাকা জরিমানাসহ সকল কার্যক্রম বন্ধ করা হয়। অপরদিকে ভুক্তভোগী কৃষকদের ক্ষতিপূরণ বাবদ সাড়ে আট লক্ষ টাকা গত ২১ মে বুধবার দুপুরের মধ্যে মালিকপক্ষকে পরিশোধ করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা ক্ষতিপূরণের টাকার জন্য আমার অফিসের সামনে অবস্থান করছেন, আমি মানিকগঞ্জে মিটিং থাকায় কথা বলতে পারিনি। অফিসে গিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।